শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১০

ওঁম শান্তি, ওঁম শান্তি............

ওবামা, তোমার শান্তিতে নোবেল প্রাপ্তি
আমাকে একটুও বিচলিত করে না ।

আফগানিস্থানের বারুদের গন্ধ,
তোমার শান্তিবাহিনীর ব্রাশফায়ারে
ঝাঁঝরা বুকের খন্ডিত পিন্ড
কিংবা বেসামরিক আফগানিদের
অসংখ্য পর্বতমালায় বাধাপ্রাপ্ত
রক্তের স্রোতধারা,
অসলোর ঐ বন্ধ কক্ষ পর্যন্ত পেৌছায় না।
তাই, তোমার শান্তিতে নোবেল প্রাপ্তি
আমাকে বিচলিত করে না।

গুয়েনতোনামা বে কারাগারের অন্ধকুঠুরীর
তেজোদীপ্ত যুবকের তারুণ্য নষ্ট হওয়ার কষ্ট,
মদ্যপ সৈনিকের বন্দী যুবকের নগ্নদেহে
বেয়োনেটের খোঁচার আত্মচিৎকারের জবাবে
তোমার সৈনিকদের আনন্দোল্লাসের শব্দ
অসলোর ঐ বন্ধ কক্ষ পর্যন্ত পেৌছায় না।
তাই, তোমার শান্তিতে নোবেল প্রাপ্তি
আমাকে বিচলিত করে না।

ইরাকে শান্তি রক্ষায় নিয়োজিত
তোমার ক্লান্ত সৈনিকগুলোর
দীর্ঘদিনের জৈবিক ক্ষুধার বিষ্পোরণে
সন্তানের সম্মুখে মায়ের সম্ভ্রমহানির আত্মচিৎকার
কিংবা হাতের নিশানা অনুশীলনের বাহানায়
বন্দুকের ট্রিগার চেপে নিরীহ ইরাকীদের
বুক এফোঁড়-ওফোঁড় করার জয়োল্লাস--
অসলোর ঐ বন্ধ কক্ষ পর্যন্ত পেৌছায় না।
তাই, তোমার শান্তিতে নোবেল প্রাপ্তি
আমাকে বিচলিত করে না।

তাই, অনেকের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে
আমিও বলি----- ওঁম শান্তি, ওঁম শান্তি ।।

বুধবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১০

বৈদেশিক ঋণ নিয়ে ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের নতুন তত্ত্ব

কানাডা সফররত বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস কানাডা সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য কানাডা সরকারের বরাদ্ধকৃত ঋণের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ যেন তার সামাজিক ব্যবসা  খাতে দেওয়া হয়। ডঃ ইউনুস কানাডা সরকারকে বোঝাতে চেষ্টা করছেন যে, বরাদ্ধকৃত অর্থ ঠিক কি খাতে ব্যয় হচ্ছে, তা না জেনে কিংবা বরাদ্ধকৃত অর্থ আর কোন দিনই ফেরত পাওয়া যাবেনা, তা নিঃশ্চিত জেনেও বাংলাদেশ সরকারকে অর্থ বরাদ্ধ দেওয়ার চেয়ে তার তথাকথিত সামাজিক ব্যবসা  অর্থ বরাদ্ধ দিলে তা থেকে একটি ভাল ফল পাওয়া যাবে।

ডঃ ইউনুসের মত বিশ্ব পরিচিত দারিদ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত একজন নোবেল বিজয়ী যোদ্ধার কাছে সরকার ও আমরা সাধারণ জনগনের প্রত্যাশা অনেক বেশী। তিনি দেশ, সরকার ও জাতির প্রতিনিধিত্বকারী একজন হয়েও নিজের সেই কর্পোরেট বাণিজ্যকে বেগবান করার প্রত্যয়ে একটি দাতা রাষ্ট্রের কাছে ঋণ গ্রহীতা দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে কিভাবে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যভাবে উপস্থাপন করলেন, তা আমার বোধগম্য নয়।

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস যে সামাজিক ব্যবসা  কথা বলেন, তা আমি যেমন বুঝিনা, বাংলাদেশের অনেক বড় বড় অর্থনীতিবিদরাও বোঝেন না বলে আমি জানি। আমি যতটুকু বুঝি, বৈদেশিক সাহায্য রাষ্ট্রের কাছে দেওয়ায়ই সবচেয়ে উত্তম। এসব সাহায্য দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষিসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অনগ্রসর খাতসমূহে ব্যয় হবে । সাধারণত কোন দেশের নীতি বাস্তবায়নের স্বার্থেই এই সব বৈদেশিক অনুদান ও ঋণ সাহায্য আমাদের মত দেশে এসে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত এসব সাহায্য আমাদের অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা বাড়ায়। এসব সাহায্য যত বর্জন করা যায় ততই দেশের জন্য মঙ্গল।

বৈদেশিক সাহায্য ব্যক্তির সামাজিক ব্যবসা  খাতে দিয়ে জনগনের কি লাভ হবে ? তাছাড়া একটি দাতা রাষ্ট্রকে এই ধরনের প্রস্তাব দিয়ে রাষ্ট্রকে ছোট করার কোন অধিকার ডঃ ইউনুসের নেই ।

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস গ্রামীন ব্যাংক, গ্রামীনফোনসহ  বিভিন্ন ব্যবসাকে যে সামাজিক ব্যবসা  বলে অভিহিত করেন সেগুলো দারিদ্রতা হ্রাসে কতটুকু ভূমিকা রেখেছে ? ডঃ ইউনুস-এর কথিত সামাজিক ব্যবসা  হচ্ছে বহুজাতিক পূঁজির ছদ্মবেশী বাজার । কানাডা সরকারকে দেওয়া তার প্রস্তাবের অর্থ দাড়ায়, এদেশে বহজাতিক পূঁজিকে আমন্ত্রন জানানো । এতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কিছুই নেই।

তাই, ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি আমার জিজ্ঞাসা :

বৈদেশিক ঋণের টাকায় সামাজিক বাণিজ্য, নাকি ছদ্মবেশী বহুজাতিক পূঁজির বাজার তৈরী করবে ?